১৩ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার ২৭ বছর পূর্ণ হচ্ছে। ১৯৮৬ সালটি ছিল দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চা এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে অনন্য এক বছর। ওই বছরের ২৫ আগস্ট সিলেটে প্রতিষ্ঠিত হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। এটিই দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়। হাঁটি হাঁটি পা পা করে ২৭টি বছর অতিক্রম করল এ বিশ্ববিদ্যালয়। শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করে সে তার আলোকোজ্জ্বল দীপ্তি ছড়াচ্ছে দেশ-বিদেশে। ১৯৯১-এর ১৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র তিনটি বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি তার একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে রয়েছে ২৮টি বিভাগ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোলমডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়েছিল, তা অর্জনের পাশাপাশি কিছু অস্বস্তিকর ইতিহাসও আছে এর, যা কলঙ্কিত করেছে ৩২০ একরের পবিত্র এ ভূমিকে। তবে সেই ক্ষতচিহ্ন বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, এগিয়ে যাচ্ছে বীরদর্পে।
২৭ বছরে অসংখ্য অর্জন আছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের, যা কেবল দেশব্যাপী নয়, সুনাম কুড়িয়েছে আন্তর্জাতিক পরিসরেও। দেশে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম কিনতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো, তখন এই বিশ্ববিদ্যালয় দেখিয়ে দিয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়াকে কিভাবে স্বচ্ছ, সুন্দর, নির্ভেজাল ও সহজতর করা যায়। মোবাইলে ভর্তি প্রক্রিয়ার চিন্তা এ বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথম। এখন দেশের প্রায় সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোবাইলে ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে, যার ফলে শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকের যেমন মূল্যবান সময় বাঁচছে তেমনি অনেক ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না তাদের এবং অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। আমরা যখন জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি তখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় মেধাবী মুখ দেখিয়েছে কিভাবে নিরাপত্তা প্রক্রিয়াকে সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত করা যায়। কম খরচে কিভাবে ড্রোন আবিষ্কার করা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল মেধাবী ছাত্র তা করে দেখিয়েছে। এবং তাদের উদ্ভাবিত ড্রোন যখন দেশের জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিতকরণে ব্যবহৃত হয় তখন এর চেয়ে তৃপ্তির কিংবা আনন্দের আর কী হতে পারে!